স্বদেশ ডেস্ক:
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম পদ ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তার করা রিটের বিষয়ে আদেশের জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছিল হাইকোর্ট। আজ জানা যাবে তিনি মেয়রের দায়িত্ব ফিরে পাবেন কিনা।
গত বুধবার (১৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো: আক্তারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটটির ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সাথে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
এ বিষয়ে বেলায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, মেয়র পদ ফিরে পেতে এবং তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট রিট দায়ের করেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই রিটের শুনানি শেষে আদেশের জন্য ২৩ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল সোমবার বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা ৭ মামলায় জাহাঙ্গীর আলমকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ জেলায় দায়ের করা মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। এরপর ওই বছরের ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম।
এর আগে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
চার মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলকে কটূক্তি করেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় দুটি সংস্থা নিয়েও নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি। জাহাঙ্গীর মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
এ ঘটনায় গাজীপুরে মেয়রের শাস্তির দাবিতে মশাল মিছিল বের হয়। রাজনীতির অঙ্গনে জাহাঙ্গীরের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গাজীপুরের পরিস্থিতি শান্ত করতে আওয়ামী লীগ উদ্যোগ নেয়।
গত ৩ অক্টেবর দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ। এতে সই করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে জাহাঙ্গীরকে জবাব দিতে বলা হয়। শোকজের জবাব দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান জাহাঙ্গীর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্ষমা পাননি তিনি।